বগুড়ার করোনাজয়ী ৪০ পুলিশ সদস্য প্লাজমা দিতে ঢাকায়
করোনাজয়ী পুলিশ সদস্যরা প্লাজমা দিতে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেয়ার আগে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেছেন জেলা পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা। বগুড়ায় করোনাজয়ী পুলিশদের মধ্যে প্রথম ধাপে ৪০ জন সদস্য প্লাজমা দান করতে ঢাকার রাজারবাগ সেন্ট্রাল পুলিশ হাসপাতালে আসছেন। রোববার (১৬ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে এই পুলিশ সদস্যরা রাজধানী ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন আগে রাজারবাগ সেন্ট্রাল পুলিশ হাসপাতাল থেকে একটি মেডিকেল দল বগুড়ায় এসেছিল। তারা জেলার করোনা আক্রান্ত ১১৭ জন পুলিশ সদস্যদের শরীরে অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করেন। এর মধ্যে ৫৯ জন পুলিশ সদস্যের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে বলে তারা জানান। পরে তাদের প্লাজমা দেয়ার জন্য নির্বাচিত করা হয়। তাদের মধ্যে ৪০ জন প্রথম ধাপে রোববার ঢাকায় আসছেন প্লাজমা দান করতে। বাকি ১৯ জন সদস্য দ্বিতীয় ধাপে কাল সোমবার আসবেন।
রোববারের ৪০ জন পুলিশ সদস্যের মধ্যে পুলিশ পরিদর্শক রয়েছেন ১ জন, ১২ জন উপপরিদর্শক (এসআই), ৮ জন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ও ১৯ জন কনস্টেবল রয়েছেন।
প্লাজমা দান করার সুযোগ পেয়ে পুলিশ সদস্যরাও আনন্দিত। তারা বলছেন, পুলিশ সব সময়ই মানুষের কল্যাণে কাজ করে। এর অংশ হিসেবে আমরা প্লাজমা দান করতে যাচ্ছি।
রোববার প্লাজমা দিতে যাওয়ার আগে বগুড়ার পুলিশ লাইন্স মাঠে কথা হয় কাহালু থানার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো. শেখ ফরিদ উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি জানান, ‘মহামারী করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় প্লাজমা দেয়ার সুয়োগ পেয়ে আমরা খুশি। পুলিশ সদস্য হিসেবে দেশের এমন সেবায় অবদান রাখতে পারছি; এটা খুব আনন্দেরও খবর।’
পুলিশ কনস্টেবল মোসাদ্দেক হোসেনও যাচ্ছেন প্রথম ধাপে। কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি জানালেন তার অভিব্যক্তি। বললেন, তিনি জুন মাসের ৮ তারিখে করোনা শনাক্তের কথা জানতে পারেন। পরে ১৪ দিন পর পরীক্ষায় নেগেটিভ আসে। করোনা আক্রান্ত হলে কী ধরনের কষ্ট তা বুঝেছেন। সেই কষ্ট থেকেই প্লাজমা দেয়ার বিষয়ে নিজের মধ্যে একটি বোধ কাজ করে। তিনি বলেন, প্রথমবার এমন অভিজ্ঞতা হতে যাচ্ছে। এজন্য একটু ভয়ও করছে। তার উপর কিছুদিন আগে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন। করোনা আক্রান্ত হওয়ার রেশ এখনও শরীরে রয়ে গেছে।
রোববার বগুড়া থেকে প্লাজমা দিতে যাওয়া উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা এ সময় সংক্ষিপ্ত প্রেস ব্র্রিফিং করেন। জেলার পুলিশ প্রধান জানান, মেডিকেল টিমের পরীক্ষায় ৫৯ জন পুলিশ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এদের মধ্যে ৪০ জন প্রথম ধাপে ঢাকায় যাচ্ছেন। সোমবার যাবেন আরও ১৯ জন। করোনা মহামারিতে প্লাজমা দান করে পুলিশ দেশের এই ক্রান্তিকালে যে অবদান রাখছে তা বিশেষভাবে লক্ষ্য করার মতো। জেলা পুলিশ জানায়, এখন পর্যন্ত বগুড়ায় মোট ১৪৯ জন পুলিশ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে ১৪২ জন সুস্থ হয়েছেন।
রাজশাহী বার্তা/admin