হিজাব নয়, স্কুল ড্রেস না পরায় শিক্ষার্থীদের পেটানো হয়
নওগাঁর মহাদেবপুরের দাউল বারবাকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে হিজাব পরায় শিক্ষার্থীদের পেটানো হয়নি বরং বিদ্যালয়ের নির্ধারিত পোশাক (স্কুল ড্রেস) পরে না আসায় কয়েকজন শিক্ষার্থীকে পিটুনি দেয়া হয়েছিল।
সোমবার রাত ৮টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের কাছে জমা দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রশাসনের তরফ থেকে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান মহাদেবপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবদুল মালেক কমিটির তিন সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে ইউএনও মিজানুর রহমানের কাছে চার পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। তদন্তে হিজাব পরায় শিক্ষার্থীদের মারধরের সত্যতা পায়নি কমিটি।
স্কুলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য গুজব ছড়িয়ে শিক্ষিকা আমোদিনি পালের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের উসকে দেওয়ার প্রমাণ পেয়েছেন তারা। তদন্তে হিজাব পরায় শিক্ষার্থীদের পেটানোর অভিযোগের সত্যতা মেলেনি।
তদন্তে কমিটির কাছে মনে হয়েছে, স্কুল ড্রেসের কারণেই গত ৬ এপ্রিল বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমোদিনি পাল ও শরীর চর্চা শিক্ষক বদিউল আলম শিক্ষার্থীদের পেটান। আর স্কুলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে শিক্ষক আমোদিনী পালকে ফাঁসানোর জন্য ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তদন্তে হিজাব পরায় শিক্ষার্থীদের পেটানোর
অভিযোগের সত্যতা মেলেনি। তদন্তে কমিটির কাছে মনে হয়েছে, স্কুল ড্রেসের কারণে গত ৬ এপ্রিল বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক
আমোদিনি পাল ও শরীর চর্চা শিক্ষক বদিউল আলম শিক্ষার্থীদের পেটান। যারা গুজব ছড়িয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে কমিটি।
এছাড়া ৭ এপ্রিল বিদ্যালয়ে ১৫০ থেকে ২০০ ব্যক্তি হামলা চালিয়েছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ
ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
মিজানুর রহমান আরও বলেন, স্কুল ড্রেস না পরে আসায় শিক্ষক আমোদিনী পাল ও আরেক শিক্ষক বদিউল আলম শিক্ষার্থীদের পিটুনি দেন। অথচ প্রধান শিক্ষক ধরনী কান্ত বর্মন শুধু শিক্ষক আমোদিনি পালকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। এ ঘটনা তদন্ত কমিটির কাছে উদ্দেশ্যমূলক মনে হয়েছে। শুধু আমোদিনি পালকে কারণ দর্শাতে বলায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। এছাড়া প্রতিবেদনে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে শিক্ষার্থীদের পেটানোয় শিক্ষক আমোদিনি পাল ও শিক্ষক বদিউল আলমের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
কারা গুজব ছড়িয়েছে, তদন্ত কমিটি তাদের চিহ্নিত করতে পেরেছে কি না, জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, কিছু ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা গেছে।
তবে এ মুহূর্তে নাম বলা যাচ্ছে না। আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হলে সবাই জানতে পারবেন।