যশোরের গুড়ের অপূর্ব স্বাদ পাচ্ছেন বিদেশিরাও
বাড়িতে বাড়িতে চলছে গুড় ও পাটালি বানানোর কাজ। এ অঞ্চলের গাছিরা শীতের শুরুতেই খেজুর গাছ কেটে ‘ঠিলে’ ঝুলিয়ে রস সংগ্রহ করছেন
যশোরের মণিরামপুরের রাজগঞ্জে উৎপাদিত পাটালি গুড়ের স্বাদ সারাদেশের মানুষের কাছে যেমন প্রিয় তেমনি তা মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর প্রবাসীসহ সেখানকার স্থানীয় মানুষের কাছেও অত্যন্ত প্রিয়। তাই এ অঞ্চলের খেজুর রসের তৈরি গুড়-পাটালি এখন মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে রফতানি করা হচ্ছে।
হাড় কাঁপানো শীতকে উপেক্ষা করে ভোর রাত থেকেই গাছিরা (খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রাহক) বের হচ্ছেন খেজুরের রস সংগ্রহ করতে। উপজেলার রাজগঞ্জ অঞ্চলের প্রতিটি গ্রামেই এখন চলছে খেজুরের রস সংগ্রহের কাজ। সেই রস দিয়ে বাড়িতে বাড়িতে চলছে গুড় ও পাটালি বানানোর কাজ। এ অঞ্চলের গাছিরা শীতের শুরুতেই খেজুর গাছ কেটে ‘‘ঠিলে’’ ঝুলিয়ে রস সংগ্রহ করছেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খেজুর রসের চাহিদা শুধু গ্রামেই নয়, শহরেও ব্যাপক। চাহিদা মেটাতে গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে তা বিক্রির জন্য গাছিরা ভোরবেলাই রওনা দেন শহরের দিকে। কাঁচা রস ও রসের তৈরি গুড়-পাটালির দাম ভালো হওয়ায় লাভবান হচ্ছেন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার গাছিরা।
জানা যায়, রসের তৈরি গুড় বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬ কেজি ওজনের প্রতি ছোট ভাঁড়ের দাম ৯শ’ থেকে ১ হাজার টাকা ও বড় ভাঁড়ের দাম ১৯শ’ থেকে ২ হাজার টাকা ও পাটালি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা দরে।
তবে, রফতানি হওয়ার কারণে রাজগঞ্জ অঞ্চলের হাট-বাজারে এবার গুড়-পাটালির সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়া বাজারে নতুন গুড়-পাটালির দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ ক্রেতারা অনেকটা হতাশ হলেও গাছিরা রয়েছেন আনন্দে।
এলাকার গাছি আলী আকবর, গুড় ব্যবসায়ী ভোলা জেলার রফিকুল ও রহমত জানান, দেশের তৈরি উন্নতমানের গুড়-পাটালি কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সেগুলো সরবরাহ করেন। তাদের সরবরাহকৃত গুড় ও পাটালি এখন সরাসরি দু’টি দেশে (মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর) রফতানি করা হচ্ছে।
তারা মনে করেন, এই ব্যবসাকে আরও সমৃদ্ধ করতে হলে প্রতিটি এলাকায় খেজুর গাছের চাষ করার জন্য দ্রুত সরকারি-বেসরকারি উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে। এছাড়া এলাকার ইটভাটাগুলোতে খেজুরগাছ পোড়ানো বন্ধ করতে হবে।
রাজশাহী বার্তা/admin