৯ ঘণ্টার বেশি ঘুমালে যে ৮টি মারাত্ম’ক ক্ষতি হবে

সময়: 10:04 am - January 29, 2020 | | পঠিত হয়েছে: 250 বার

দিনে কতক্ষণ ঘুমলে শরীর সুস্থ থাকবে, সেই নিয়ে আমাদের মধ্যে অনেকেই ঠিক মতো জানেন না। তাই তো ইচ্ছা মতো ঘুমাতে থাকেন অনেকেই। কেউ ৬ ঘন্টা ঘুমিয়েই লেগে পরেন দৈনন্দিন কাজে, তো কারও কারও তো ১০-১২ ঘন্টার আগে ঘুম ভাঙতেই চায় না। এই দুই ক্ষেত্রেই কিন্তু শরীর ভাঙতে শুরু করে। বিভিন্ন গবেষণায় একথা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত হয়েছে, দৈনিক ৮ ঘন্টা ঘুমালে শরীর এবং মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতার উন্নতি ঘটে।

কিন্তু এর থেকে বেশি ঘুমলে শরীরে বাসা বাঁধতে শুরু করবে নানা মারণ রোগ, ফলে আপনার আয়ু লাফিয়ে লাফিয়ে কমতে শুরু করবে। তাই তো দীর্ঘদিন সুস্থভাবে বাঁচতে ৮ ঘন্টার বেশি না ঘুমানোই উচিত। আর ৯ ঘণ্টার বেশি ঘুমালে হতে পারে মারাত্ম’ক ক্ষতি। এখন প্রশ্ন হল কীভাবে অতিরিক্ত ঘুম আমাদের শরীরের ক্ষতি করে থাকে? চলুন জেনে নেওয়া যাক-

১. স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে

বিশেষজ্ঞদের মতে, নিয়মিত বেশিক্ষণ ঘুমাতে শুরু করলে ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় ৪৬-৫০ শতাংশ বেড়ে যায়। আসলে ৮ ঘণ্টার বেশি ঘুমালেই মস্তিষ্কের ভেতরে থাকা নার্ভ সেলের ক্ষতি হতে শুরু করে। যার প্রভাবে স্বাভাবিকভাবেই স্ট্রোকের মতো মারণ রোগের ফাঁদে পরার সম্ভাবনা যায় বেড়ে।

২. সারা শরীরে প্রদাহের মাত্রা বেড়ে যায়

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ৮ ঘণ্টার বেশি সময় ঘুমালে দেহের ভেতরে প্রদাহের মাত্রা বেড়ে যেতে শুরু করে,যার প্রভাবে শরীরের প্রতিটি অঙ্গের কর্মক্ষমতা কমতে থাকে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যায় বেড়ে। আর এমন পরিস্থিতিতে আয়ুও যে চোখে পরার মতো কমে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই!

৩. ওজন বৃদ্ধি পায়

৫ ঘন্টার কম এবং ৯ ঘন্টার বেশি ঘুমালে শরীরে মেদ জমার হার বেড়ে যায়। আর একথা নিশ্চয় আপনাদের জানা আছে যে, ওবেসিটি বা অতিরিক্ত ওজনের কারণে ডায়াবেটিস, হার্টের রোগ, উচ্চ র’ক্তচাপসহ একাধিক মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। তাই দীর্ঘ জীবন পেতে চাইলে যেমন কম ঘুমানো উচিত নয়, তেমিন বেশিক্ষণ ঘুমনোর অভ্যাস থেকেও নিজেদের দূরে রাখা বাঞ্ছনীয়।

৪. স্মৃতিশক্তি কমে যায়

গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়েছে, ৯ ঘণ্টার বেশি ঘুমালে ধীরে ধীরে স্মৃতিশক্তি কমতে শুরু করে। সেই সঙ্গে অ্যালঝাইমারের মতো মস্তিষ্কের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বৃদ্ধি পায়।

৫. মা হওয়ার পথে বাঁধার সৃষ্টি হয়

মেয়েরা বেশিক্ষণ ঘুমালে তাদের শরীরে নানা বদল আসতে শুরু করে। সেই সঙ্গে ফার্টিলিটিও হ্রাস পায়। যে কারণে মা হতে গিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়। তাই মা হওয়ার পরিকল্পনা করলে ৯ ঘন্টার বেশি একেবারেই ঘুমবেন না কিন্তু!

৬. স্ট্রেস এবং মানসিক অবসাদের মাত্রা বাড়ে

১৮-৫৯ বছর বয়সিদের দিনে কখনই ৯ ঘন্টার বেশি ঘুমানো উচিত নয়। কারণ এমনটা করলে অবসাদে বা ডিপ্রেশন আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। আর একথা নিশ্চয় সবাই জানেন, আমাদের দেশে গত কয়েক বছরে অবসাদে আক্রান্ত হয়ে আত্মহ’ত্যা করার প্রবণতা অনেক বৃদ্ধি পেয়ছে। তাই সাবধান! নিজেকে এই দীর্ঘ লিস্টের এক জন বানাবেন না দয়া করে।

৭. হার্টের স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটে

ঘুমানোর সময় হার্টে র’ক্ত সরবরাহের মাত্রা খুব কমে যায়। দীর্ঘ সময় ধরে এমনটা হতে থাকলে হার্টের কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়। ফলে নানাবিধ হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। গত কয়েক দশকে সারা বিশ্বেই কম বয়সিদের মধ্যে হার্টের রোগের প্রকোপ খুব বৃদ্ধি পয়েছে। এমনটা হওয়ার পেছনে বেশি মাত্রায় ঘুম যে অন্যতম প্রধান কারণ, তা নিশ্চয় আর বলে দিতে হবে না।

৮. ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে

৯ ঘন্টার বেশি ঘুমালে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, বেশিক্ষণ ঘুমালেই শরীরে শর্করা সম্পর্কিত ইনটলারেন্স তৈরি হয়। ফলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। আর একথা তো সবারই জানা যে, একবার কেউ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে একে একে আরও সব মার’ণ রোগ শরীরে বাসা বাঁধতে শুরু করে। ফলে কম বয়সে মৃ’ত্যুর আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।

রাজশাহী বার্তা/admin

এই বিভাগের আরও খবর