রাজশাহীতে রাস্তা ফাঁকা; বাজার গুলোতে মানুষের ঠেলাঠেলি!
করোনাভাইরাস মোকবেলায় ঘরে থাকার যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে রাজশাহীতে অনেকেই তা মেনে চলছেন বেশ সচেতনভাবেই। কিন্তু কিছু মানুষকে যেন কোনভাবেই ঘরে রাখা যাচ্ছেই না। প্রয়োজনের অজুহাতে বেরোচ্ছেন বাড়ি থেকে।
বিশেষ করে অলিগলিগুলোতে মানুষকে ঘরে থাকা বাধ্য করতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে স্থানীয় প্রশাসনকে। এছাড়া বিশেষ ঝুঁকি তৈরী করছে রাজশাহীর কাঁচাবাজারগুলো। শহরের রাস্তায় লোকজনের চলাচল কম দেখা গেলেও বাজারগুলোতে থাকছে ঠেলাঠেলির অবস্থা। নগরীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, এগুলোতে বোঝার উপায় নেই করোনার ভয়াবহ অবস্থা। সামজিক দূরত্ব নিশ্চিত করাতো হয়ই না বরং একে অন্যকে ধাক্কাধাক্কি করে মনের আনন্দে কেনাকাটা করছেন। শুধু শহরের বাজারই নয় গ্রামের বাজারগুলোতেও যেন কোনভাবেই বাড়ছে না সচেতনতা। বাজারে যাওয়া সচেতন মানুষরা বলছেন, মানুষকে সতর্ক করতে বাজারগুলোতে প্রতিদিনই মাইকিং এর ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
করোনাভাইরাসের কারণে রাজশাহীতে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে দৃশ্যপট। প্রাণঘাতি এ করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে মানুষের উপর। ক’দিন ধরেই রাজশাহীতে চলছে অঘোষিত লকডাউন। আর এর প্রভাবে জনজীবনে এর প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে গত তিনদিন থেকে রাজশাহী নগরী ও জেলায় মানুষের মধ্যে আতঙ্কের পাশাপাশি সচেতনতার বিষয়টি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে রাজশাহীতে সেনাবাহিনী নামার পর থেকে পুরো রাজশাহীর চিত্র পাল্টে গেছে। জেলা প্রশাসনের সাথে সেনাবাহিনী কঠোর অবস্থান নেয়ায় রাস্তা-ঘাট ফাঁকাই থাকছে। বিশেষ করে দুপুরের পর রাজশাহী নগরীর রাস্তা ঘাট থাকছে জনশূণ্য।
প্রশাসনের পক্ষে বলা হয়েছে সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রয়োজনীয় কাজ সারতে হবে। দুটার পর বাইরে থাকা যাবে না। তবে, দুপুরের আগে কাঁচাবাজারগুলোতে উপেক্ষিত হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব মানার নির্দেশনা। নগরীর সাহেব বাজার কাঁচাবাজারে সকাল থেকে মানুষের আনাগোনা থাকছে বেশি। যার কারণে এখানে অবস্থান নিয়েছে সেনাবাহিনী। দেখা গেছে, কাঁচা বাজারের সামনে একটি দড়ি টানানো হয়েছে। সম্মুখে রয়েছে সেনাবাহিনীর কিছু সদস্য।
লোকজন বাজার শেষ করা মাত্র তাদের বের করে দেয়া হচ্ছে। যারা বাজার করতে ঢুকছেন তাদের দ্রুত কেনাকাটা শেষ করার তাগিদ দিচ্ছেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। তবে বাজারের ভেতরে ঢোকার পর মানুষ যেন ভুলেই যাচ্ছে তাদের সচেতনতার বিষয়টি। অনেকটা গাদাগাদি করেই মানুষ বাজার করছেন। সামাজিক দূরত্বের কথা বলা হলেও বাজারের মধ্যে তা মানা হচ্ছে না। নগরীর অন্যান্য কাঁচা বাজারে সকাল থেকেই লোকজন দেখা যাচ্ছে। এক প্রকার সমাগম করেই কেনাকাটা করছেন। নগরীর শালবাগান ও উপশহর নিউ মার্কেটের কাঁচাবাজারে গিয়ে এমন ঠেলাঠেলির চিত্রই চোখে পড়ে।
সচেতন অনেক মানুষও এমন ঠেলাঠেলিতে বিরক্ত। তারা বলছেন, বাজারগুলোতে বাজার কমিটির পক্ষ থেকে মাইকিং এর ব্যবস্থা থাকা উচিৎ।
এদিকে, বিকেলের পর থেকে নগরীর প্রধান প্রধান রাস্তুাঘাটগুলো থাকছে ফাঁকা। যান চলাচল নেই বললেই। এক সময়ের জনবহুল সাহেববাজার দুপুর গড়ালেই জনশূণ্য হয়ে পড়ছে। এই অবস্থা চলছে রাত পর্যন্ত। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর নগরীর অলিগুলিতে ছাড়া প্রধান রাস্তা-ঘাটে লোকজনের দেখা মিলছে না। একই অবস্থা বিরাজ করছে গ্রামাঞ্চলেও। সন্ধ্যার পর জনশূণ্য হয়ে পড়ছে গ্রামীণ রাস্তাঘাট।
রাজশাহী মেট্রপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, আমরা এনিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। প্রতিটি পয়েন্টে পুলিশ পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু আসলাম বলেন, বড় রাস্তায় মানুষকে নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও অলিগলিগুলোতে সামাল দিতে বাড়তি বেগ পেতে হচ্ছে। মানুষকে সচেতন করতে আমরা কষ্ট করে যাচ্ছি। বিভিন্ন জায়গায় জরিমানাও করছি। মানুষ সচেতন হচ্ছে।
রাজশাহী বার্তা/admin