ডাবেই সচল বাচ্চুর জীবিকার চাকা
রোজিনা সুলতানা রোজি : সকাল থেকে রাত অবধি ডাবের সঙ্গেই সচল তার জীবিকার চাকা। প্রায় গত ৮ বছরের বেশী সময় ধরে সড়কের পাশে ফুটপাতে ডাব বিক্রি করে এক সন্তান ও স্ত্রীকে নিয়ে তার সংসার ভালোই চলছে।
ক’দিন আগেও প্রতিদিন ডাব বিক্রি করে প্রতিদিন ৬ থেকে সাতশ টাকা আয় হয়েছে তার। তবে করোনা ভাইরাসের আশঙ্কায় শহরের লোক সমাগম কমে যাওয়ায় কমে গেছে তার আয়ও। এখন প্রতিদিন দুইশ থেকে তিনশ টাকা আয় করতে হিমসীম খেতে হচ্ছে। দুদিন আগেও বিনা লাভে ডাব বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। এ কথাগুলো ডাব আর হাসুয়া হাতে নিয়েই বলছিলেন রাজশাহী নগরীর দড়িখরবোনা মোড়ের ভ্রাম্যমাণ ডাব ব্যবসায়ী বাচ্চু।
এ মোড়েই গত ৮ বছর ধরে ডাব বিক্রি করেন তিনি। বাচ্চু জানালেন, কেবল গরমের মৌসুম শুরুর সঙ্গে সঙ্গে যখন ডাবের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছিল ঠিক সেই সময়ে করোনা ভাইরাসের কারণে এখন শহর ফাকা। তাই তার ব্যবসায় ছেদ পড়েছে। তবুও লাভের আশায় ডাবের পশরা সাজিয়েছেন তিনি।
বাচ্চু বলেন, তার ডাব মুলত বরিশাল থেকে নিয়ে আসা। সেখান থেকে ট্রাকে করে নিয়ে আসেন আড়ৎদাররা। প্রতিদিন সকালে সেই আড়ৎ থেকে চাহিদা অনুযায়ী ডাব কিনে নিয়ে এসে ভ্যানে সাজিয়ে সারাদিন দাড়িয়েই বিক্রি করেন তিনি। সব মিলিয়ে ভালোই আয় হয় তার। এই ডাব বিক্রির লাভেই চলে যায় তার সংসার।
বাচ্চুর বাড়ি নগরীর কদিরগঞ্জ এলাকায়। স্ত্রী আর এক শিশুকন্যা আফসানা মিমকে নিয়েই তার সংসার। বাবার অভাবের সংসারে পড়ালেখা করা হয়নি তার। আগে বিভিন্ন কাজ করলেও এখন তার মুল ব্যবসা ডাবেই নির্ভর করে তুলেছেন। ডাব বিক্রির আয়ে তার জীবন সংসারের চাকা সাচ্ছন্দেই চলছে। নিজে পড়ালেখা করতে না পারলেও তার একমাত্র কন্যা শিশুকে পড়ালেখা শিখিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার প্রবল ইচ্ছে তার।
সদা হাস্যজ্জল বাচ্চু জানালেন, ডাবের মৌসুম শুরু হয় গ্রীষ্ম থেকে। শীতে কিছুটা শিথিল থাকে। তারমতে কেবল গরমের মৌসুম শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন উদ্যোমে ডাবের পশরা মেলেছেন। কদিন ভালো কেনাবেচাও শুরু হয়। তবে তিন-চারদিন থেকে তেমন ক্রেতা মিলছে না।
কারন হিসেবে তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের কারনে মানুষজন কমে গেছে। তার ক্রেতা বলতে মূলত পথ চলতি মানুষ। মানুষ কমে যাওয়ায় তার ব্যবসাও কমে গেছে। তারপরেও সারাদিন যা আয় হচ্ছে তা দিয়েই দিব্বি চলে যাচ্ছে তার সংসার।
রাজশাহী বার্তা/admin