চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন বাজার-ব্যাংকে ভিড়, মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ায় কঠোর বিধিনিষেধ ঘোষণা করায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন বাজার, দোকানপাট, ব্যাংকে ভিড় জমাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তবে কোথাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বালাই নেই।
রোববার (৪ এপ্রিল) সকালে জেলা শহরের বিভিন্ন বাজার ও সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, কঠোর বিধিনিষেধ ঘোষণার পর প্রস্তুতি নিতে বাজারে ভিড় করছেন অনেকেই। এতে বাজারমুখী রাস্তায় দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে। সকল জরুরি সেবা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্যের দোকানপাট খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও অতিরিক্ত পণ্য কিনতে ব্যস্ত ক্রেতারা।
সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা শহরের পুরাতন বাজারস্থ ডাচ বাংলা ব্যাংকে গিয়ে দেখা যায়, ব্যাংকিং সেবা শুরুর আগেই অপেক্ষায় রয়েছেন অনেকেই। ব্যাংক খোলার সঙ্গে সঙ্গেই লম্বা লাইন। এ সময় দেখা যায়, ব্যাংকের নির্ধারিত বসার জায়গায় স্থান না হওয়ায় দাঁড়িয়ে আছেন অনেকেই।
ম্যানেজার মো. রাশেদ মামুন বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কঠোর বিধিনিষেধের সময়ও চালু থাকবে সকল ব্যাংকিং কার্যক্রম। তারপরও সাধারণ মানুষ না বুঝেই ব্যাংকে এসে ভিড় করছেন। অনেকেই মনে করছেন ব্যাংকিং সেবা বন্ধ থাকবে, তাই টাকা তুলছেন।
মাস্ক না থাকলে কাউকে ব্যাংকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না জানিয়ে তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা ডাচ বাংলা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় থেকে কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। আজকের (রোববার) মধ্যেই নির্দেশনা পাওয়া যেতে পারে এবং সে অনুযায়ী ব্যাংকিং কার্যক্রম চলবে। এ ছাড়া কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে ২৪ ঘণ্টা এটিএম বুথের সেবা চালু থাকবে।
সদর উপজেলার ইসলামপুরের খাদিজা বেগম বলেন, আমার স্বামী প্রবাসে থাকেন। তিনি টাকা পাঠিয়েছেন। কয়েকদিন পর টাকা তোলার কথা থাকলেও হঠাৎ কঠোর বিধিনিষেধের ঘোষণা আসায় আজই তুলতে এসেছি। টাকা তোলা হয়ে গেলে বাজারে গিয়ে বিভিন্ন তরকারি, শাকসবজি, মসলা কিনে নেব।
জেলা শহরের পুরাতন কাঁচাবাজার, আলুপট্টি, মসলা বাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উপচে পড়া ভিড়ের মধ্যেই বিভিন্ন বয়সী নারী পুরুষ বাজার করছেন। সদর উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়নের চাঁপাই-মহেশপুর গ্রামের শিক্ষার্থী ইসমোতারা খাতুন বলেন, মা-ফুফু-দাদিকে নিয়ে বাজার করতে এসেছি। কঠোর বিধিনিষেধের সময় আরও বাড়তে পারে। তাই অন্তত ১৫ দিনের জন্য সাংসারিক বিভিন্ন প্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্য নিতে বাজারে এসেছি। প্রত্যেকটি পণ্যের দাম বেড়েছে বলেও জানান তিনি।
মুদি দোকানি আশরাফুল ইসলাম বলেন, কঠোর বিধিনিষেধের কারণে প্রচুর ভিড় করছে ক্রেতারা। আমাদের কোনো প্রস্তুতি ছিল না। হঠাৎ করেই এতো ভিড়। সকল পণ্যের দাম স্বাভাবিক রয়েছে।
আলু ব্যবসায়ী শামসুল আলম বলেন, আলুর বাজারে এমন পরিস্থিতি জীবনেও দেখিনি। আলুর বাজারে কালকে তেমন কোনো ভিড় ছিল না। সাধারণ মানুষ ঘরবন্দি হয়ে যাওয়ার ভয়ে বাজারে এমন ভিড় করছেন।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, এমন পরিস্থিতিতে অনেক অসাধু ব্যবসায়ী বিভিন্ন পণ্যদ্রব্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। কঠোর বিধিনিষেধে কোনো বিক্রেতা যেন অহেতুক দাম বাড়াতে না পারে, তা কঠোরভাবে দমন করবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। আগামীকাল (সোমবার) থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নিয়ে নিয়মিতভাবে বাজার মনিটরিং করা হবে।
রাজশাহী বার্তা/admin