অযত্নে-অবহেলায় বিলুপ্তির পথে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ঐতিহাসিক স্থাপনা
প্রাচীন গৌড়ের ইতিহাস সমৃদ্ধ জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ। তবে কার্যকর উদ্যোগ আর প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের উদাসীনতায় হুমকির মুখে জেলার অমূল্য পুরাকীর্তিগুলো। শত শত বছর আগের এসব প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের বেশিরভাগই এখন অযত্ন-অবহেলায় ধ্বংসের মুখে। আবার অনেক নিদর্শনই এখনও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের তালিকার বাইরে। ছোট পরিসরে দু-একটি পুরাকীর্তির সংস্কার করা হলেও বেশিরভাগই পড়ে আছে অযত্নে-অবহেলায়। তবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের দাবি, একে একে প্রতিটি নিদর্শনই সংস্কার করা হচ্ছে।
প্রাচীন জনপদ চাঁপাইনবাবগঞ্জের সর্বত্রই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে নানা প্রাচীন নিদর্শন ও ঐতিহাসিক স্থাপনা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে রয়েছে- ছোট সোনা মসজিদ, হযরত শাহনেয়ামতুল্লাহ (রা.) মাজার, তোহাখানা, দারাসবাড়ি মসজিদ ও নওদা বুরুজ। এছাড়া জেলার বিখ্যাত ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে রয়েছে, কানসাটের পুরনো জমিদার বাড়ি, দাদনচক মসজিদ, ঐতিহাসিক নীলকুঠি, ভোলাহাটের চামচিকা মন্দির, গিলাবাড়ি প্রাচীন শিব মন্দির, কাজী সাহেবের মসজিদ, রহনপুরের অতি প্রাচীন ঠাকুরবাড়ি (মাহান্ত বাড়ি)।
ছোট সোনা মসজিদ
ঐতিহাসিক ছোট সোনা মসজিদ মুসলিম স্থাপত্য শিল্পের এক অপূর্ব নিদর্শন। এর চারকোণে চারটি অষ্টকোণ মিনার বা টারেট এবং ওপরে ১২টি অর্ধগোলকাকৃতির ও তিনটি চৌচালা আকৃতির মোট ১৫টি গম্বুজ আছে। গম্বুজগুলো এক সময় স্বর্ণখচিত ছিল বলে জানা যায়। সেখান থেকে মসজিদের নামকরণ। স্থাপত্যকলা ও শৈল্পিক সৌন্দর্যের বিচারে এ মসজিদ ‘গৌড়ের রত্ন’ হিসেবে পরিচিত।
ইতিহাস বলছে, সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহের আমলে ওয়ালী মুহাম্মাদ নামে এক ব্যক্তি ১৪৯৩ থেকে ১৫১৯ সালের মধ্যে এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। ঐতিহাসিক এই স্থাপনার কিছু দূরেই অবস্থিত তোহাখানা। ১৬৫৫ সালে মুঘল সুবাদার শাহ সুজা এটি নির্মাণ করেন। ধারণা করা হয়, শীতকালীন তাপ নিয়ন্ত্রণ ইমারত হিসেবে এটি ব্যবহৃত হতো। আর এর পাশেই রয়েছে মুঘল আমলের একটি মসজিদ ও হযরত শাহনেয়ামতুল্লাহ (রা.) মাজার। কিন্তু নিরাপত্তা ও সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে এসব ঐতিহাসিক স্থাপনা।
রাজশাহী বার্তা/admin