নাচোলে সরকারি রাস্তা বন্ধ করায় দুর্ভোগে গ্রামবাসী, ঘরে ধান তুলতে পারছে না কৃষকরা
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার নাসিরাবাদ গ্রামের একটি প্রভাবশালী পরিবার তাদের বাড়ির সামনের রাস্তার একাংশ বন্ধ করে রেখেছে। বাড়িটির অবস্থান গ্রামের শুরুতেই হওয়ায় গ্রামে ঢুকতে ও রাস্তায় চলাফেরা করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছে গ্রামবাসী।
এমনকি রাস্তার প্রায় অর্ধেক বন্ধ থাকায় ঘরে ধান তুলতে পারছেন না কৃষকরা। স্থানীয় এক কৃষক মো. মিন্টু জানান, নাসিরাবাদ এলাকায় গ্রামের সব কৃষকদের জমির ধান ঘরে তুলতে মোজাম্মেল হোসেনের বাড়ির সামনের হিয়ারিং রাস্তা ব্যবহার করতে হয়। এমনকি এই রাস্তা ব্যবহারের কোন বিকল্প নেই আমাদের।
কিন্তু গ্রামের প্রভালশালী পরিবারের মোজাম্মেল ও তার ৩ ভাই তোজাম্মেল, বারেক, তারেক তাদের বাড়ির সামনের খাস খতিয়ানভুক্ত সরকারি রাস্তা জোর করে দখল করে বন্ধ করে রেখেছে। গ্রামের পঞ্চাশোর্ধ কৃষক মো. ওয়াবাইদুর রহমান বলেন, তাদেরকে গ্রামের ৩০-৩৫টি পরিবারের সকলে মিলে অনেকবার বুঝিয়েছি, তাতে কোন কাজ হয়নি।
কোন উপায় না পেয়ে পুলিশকে জানালেও নাচোল থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি-তদন্ত) এর কোন সমাধান দিতে পারেননি। করোনাতে এমনিই তো শঙ্কার মধ্যে আছি, তার উপর যদি রাস্তা বন্ধ করার জন্য মাঠের ধান ঘরে তুলতে না পারি, তাহলে কি খাবো? এভাবেই নিজের অসহায়ত্বের কথা বলছিলেন কৃষক মো. বাবলু। তিনি আরো জানান, শুধুমাত্র মোজাম্মেলের রাস্তা বন্ধ রাখার কারনে গ্রামের ৩০-৩৫টি পরিবার ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
নাচোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা সুলতানা উদ্যোগ নিয়ে রাস্তার পিলার ও গাছ উঠিয়ে সরকারি রাস্তা জনগণের চলাচলের সুবিধা করে দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরেও আবার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন মোজাম্মেল ও তার ৩ ভাই। গৃহিনী মোসা. রেখা বলেন, ধান জমিতেই পঁচে যাচ্ছে। মাঠ থেকে মাথায় করে আনা ছাড়া আমাদের কোন উপায় নেয়। খুবই অসুবিধার মধ্যে আছে এখানকার সকল পরিবারের সদস্যরা। এব্যাপারে মোজাম্মেল জানান, এখানে সরকারি কোন রাস্তা ছিলোনা।
গ্রামবাসীর অনুরোধে আমাদের জমি রাস্তা হিসেবে দিয়েছি। নিজেদের জমি হলে ইউএনও কেন দুইবার গাছ ও পিলার উঠিয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইউএনও মহোদয় তখন বুঝতে পারেন নি, তবে পরে আমরা সঠিক কাগজ ও দলিলপত্র দেখালে আর কিছুই বলেননি। এবিষয়ে রবিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর সেই গ্রামের ৩০-৩৫টি পরিবারের পক্ষে একটি অভিযোগ করা হয়েছে।
নাচোল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাবিহা সুলতানা মুঠোফোনে জানান, গত মাসের ৩১ তারিখ সোমবার জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ হওয়ার পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তাজকির-উজ-জামান স্যার ফোন করে আমাকে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে অভিযোগের কপি আমাদের হাতে এসে পৌঁছালেই সবাইকে নিয়ে বসে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো বলে জানান তিনি।
রাজশাহী বার্তা/admin