চাঁপাইনবাবগঞ্জে আটকেপড়া ভারতীয়দের দেশে ফেরার আকুতি
করোনা ভাইরাসের কারণে অদ্ভুত পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে বেড়াতে এসে আটকে পড়েছেন বহু ভারতীয় নাগরিক। নিজ দেশে ফেরার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছেন তারা। সীমান্ত পারাপার শুরু হয়েছে কিনা তা জানতে প্রতিদিনই শিবগঞ্জ উপজেলার সোনামসজিদ ইমিগ্রেশনে খোঁজখবর নিচ্ছেন। তবে ওপারে মহদীপুরে ভারতীয় ইমিগ্রেশন চালু না করায় আটকেপড়া এসব ভারতীয় নাগরিকদের নিজ দেশে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না বলে জানা গেছে।
সেখানে কথা হয় পশ্চিমবঙ্গের মালদা জেলার কালিয়াচক থানার গোলাপগঞ্জ এলাকার সমেনা বিবির সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে জানান, খালার মৃত্যুর খবর পেয়ে গত ৭ মার্চ চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট এলাকায় (খালার বাড়ি) ছুটে আসেন। সেখানে আসার পর সোনামসজিদ ইমিগ্রেশন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আর ফিরতে পারেননি। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতিতে দুই দেশের সীমান্ত পারাপার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিজ দেশে স্বামী ও সন্তানদের কাছে ফিরতে পারেননি সমেনা।
অশ্রু ছলোছলো চোখে সমেনা বিবি জানান, তিন ছেলে-মেয়েকে রেখে এসেছি। সংসার ভাঙার উপক্রম, স্বামী ফেরার জন্য বার বার তাগাদা দেয়ায় প্রায়ই তিনি সোনামসজিদ স্থলবন্দরে খোঁজ নিতে যান। ইমিগ্রেশন চালু হলেই তিনি ফিরতে উদগ্রীব। তার প্রশ্ন পণ্যবাহী যান চলাচল করলেও তাদের কেন ভারতীয় ইমিগ্রেশন নিচ্ছেন না।
শুধু সমেনা বিবিই নয়, তার মতো প্রায় দুই হাজার ভারতীয় নাগরিক চাঁপাইনবাবগঞ্জে আটকে আছেন। প্রতিদিনই তারা সোনামসজিদ স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশনের সামনে এসে নিজ দেশে ফেরার প্রহর গুনছেন।
মালদার বোস্টমনগর থানার গুলজারনগর গ্রামের আটকেপড়া আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ভোলাহাটে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে আটকে পড়েছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমাদের জানিয়েছেন ৩১ জুন খুলবে। তবে এখনও সীমান্ত খুলেনি।
তিনি আরও জানান, ভিসার মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে অনেক আগেই। বউ-বাচ্চা ছাড়াই একটা ঈদ করেছি, আরেকটা ঈদ চলে এলো। ঢাকা-কলকাতাগামী বিমানের চার্টার্ড ফ্লাইটের টিকিটও নিয়েছিলাম, সেটাও বাতিল হয়েছে যেতে পারছিনা।
এ বিষয়ে সোনামসজিদ ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা (উপ পরিদর্শক) জাফর ইকবাল বাংলানিউজকে জানান, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কোনো বাধা না থাকলেও ভারতীয় ইমিগ্রেশন সেন্টার চালু না হওয়ায় আটকে পড়াদের পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না। আর ইমিগ্রেশন কখন চালু হবে তাও তিনি নিশ্চিত করে বলতে পারেননি। তবে মাঝে মাঝে আটকে পড়া ভারতীয় যাত্রী বা যাত্রীদের আত্মীয়-স্বজন অফিসে এসে খোঁজখবর নিচ্ছেন।
অন্যদিকে, শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাকিব আল-রাব্বি জানান, ঠিক কবে ইমিগ্রেশন চালু হবে, তা জন্য এখনও অফিসিয়ালি কোনো চিঠি বা নির্দেশনা পাওয়া যায়নি।