কোন অনুদান পাননি ভোলাহাটের ফেরিওয়ালা রিয়াজ
সময়: 7:49 pm - April 11, 2020 | | পঠিত হয়েছে: 149 বার
সাখাওয়াত জামিল দোলন : করোনা ভাইরাসের বিস্তারে দুশ্চিন্তায় পড়েছে ঘরবন্দি হাজার হাজার কর্মহীন মানুষ। বিশেষ করে অনুদান নেয়ার জন্য যারা হাত পাততে পারেননা তাদের অবস্থা দূর্বিসহ। ইতিমধ্যে কিভাবে আগামীদিনগুলো কাটবে, এই চিন্তায় অনেকেই চোখে অন্ধকার দেখতে শুরু করেছে। এনিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলার এক দিনমজুর জানালেন তার অসহায়ত্বের কথা।
ভোলাহাট উপজেলার ১ নং ভোলাহাট ইউনিয়নের কানারহাট খলসাকুড়ি গ্রামের মৃত আরপ পানওয়ালার ছেলে দিনমজুর রিয়াজ আলী (৫৫)। ৬ সদস্যের পরিবারে তিনি ও তার ছেলে কর্মক্ষম। তিনি নিজে ফেরি করে পাড়ায় পাড়ায় পিঁয়াজি আর বড়া বিক্রি করতেন আর ছেলে অন্যের চায়ের দোকানে কাজ করে কোন রকমে সংসার চালাতেন।
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সনাক্ত হবার পর গত ২৬ মার্চ থেকে সরকার চায়ের দোকান, খাবার হোটেলসহ অন্য সকল দোকান বন্ধ ঘোষণা করার পর বাবা-ছেলে কর্মহীন হয়ে পড়েন।
তিনি কোন সরকারি বা বেসরকারি অনুদান পাননি। বাড়িতে নেই খাদ্যের যোগান। এই মহাদূর্যোগে ছেলেকে বাড়ির বাইরে যেতে দিতে চান না রিয়াজ। সদস্যদের মুখের দিকে তাকিয়ে কোন অনুদানের আশা না করেই তিনি বাড়িতে পিঁয়াজি, বেগুনী আর বড়া তৈরি করে পাড়ায় পাড়ায় বিক্রি শুরু করেছেন। এ কাজেও তিনি পুলিশি হয়রানীর শিকার হচ্ছেন বলে জানান।
বড়া বিক্রির প্রাক্কালে তার সাথে কথা হয়। সকালে পান্তা ভাত খেয়ে বের হয়েছেন পিঁয়াজি, বেগুনী বিক্রি করতে। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেলেও তার অর্ধেক পিঁয়াজি, বেগুনী বিক্রি হয়নি। বিক্রি না হলে তিনি বাড়িতেও যেতে নারাজ। এসব বিক্রি করে চাল, আলু আর ডাল কিনে বাড়িতে ফিরলে তবে সবাই খেতে পাবেন। নতুবা না খেয়ে থাকতে হবে।
এভাবে তিনি গত ৫ দিন হতে পাড়ায় পাড়ায় বেগুনী-পিঁয়াজি বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন। কোনমতে খেয়ে না খেয়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেঁচে আছেন।
রিয়াজ জানান, তিনি এলাকার মেম্বারকে বলেও কোন অনুদান পাননি। কোথায় গেলে সাহায্য পাওয়া যাবে তাও তিনি জানেন না। তিনি ক্ষোভের সাথে বলেন, আমাদের দেখার কেউ নেই। তাই মরতে হলে কাজ করেই মরবো।
এ বিষয়ে ১ নং ভোলাহাট ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড মেম্বার আলফাজ হোসেন হিরো জানান, রিয়াজ ফেরি করে ভাজা পোড়া বিক্রি করেন। সে প্রতিদিনই তার কাছে অনুদানের জন্য আসে। রিয়াজ এবং রিয়াজের ছেলে ওয়াসিমের নাম তালিকায় আছে। পর্যায়ক্রমে অনুদান প্রাপ্তি সাপেক্ষে সবাইকে দেয়া হবে।
১নং ভোলাহাট ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান ইয়াজদানি জর্জ এ বিষয়ে বলেন, পর্যায়ক্রমে সব কর্মহীন পরিবারকে সরকারি অনুদান দেয়া হবে। বিষয়টি জানলাম, রিয়াজ যাতে দ্রুত অনুদান পায় সে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
রাজশাহী বার্তা/admin